Dhaner Shish Logo
ফটো ফ্রেমপ্রার্থীইশতেহার৩১ দফা
হোম
সম্পর্কে
গোপনীয়তা
এক্সগিটহাব

❤️ দিয়ে তৈরি সাব্বির

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা

সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার, অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে প্রণীত

বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়া এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র গড়িয়া তুলিয়াছিল, সেই রাষ্ট্রের মালিকানা আজ তাহাদের হাতে নাই। বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার বাংলাদেশ রাষ্ট্র কাঠামোকে ভাঙ্গিয়া চুরমার করিয়া ফেলিয়াছে। এই রাষ্ট্রকে মেরামত ও পুনর্গঠন করিতে হইবে।

দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরাইয়া দেওয়ার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয় লাভের পর বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার হঠানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমূহের সমন্বয়ে একটি "জনকল্যাণমূলক জাতীয় ঐকমত্যের সরকার" প্রতিষ্ঠা করা হইবে। উক্ত "জাতীয় সরকার" নিম্নলিখিত রাষ্ট্র রূপান্তরমূলক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করিবে।

১
সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

একটি 'সংবিধান সংস্কার কমিশন' গঠন করিয়া সকল বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংশোধনী ও পরিবর্তনসমূহ পর্যালোচনা করিয়া এইসব রহিত/সংশোধন করা হইবে। সংবিধানে গণভোট (Referendum) ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করিয়া জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হইবে।

সহজ করে বলা
সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠনফ্লিপ

এই পয়েন্টের মূল কথা হলো জনগণের হাতে আসল ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া। বহু বছর ধরে সংবিধানে এমন অনেক পরিবর্তন হয়েছে যা গণতন্ত্রকে দুর্বল করেছে। এই সংস্কারের মাধ্যমে সেই সব পরিবর্তন পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে এবং জনগণকে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সিদ্ধান্তে অংশগ্রহণের অধিকার (গণভোট) ফিরিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ বড় কোনো সিদ্ধান্ত কয়েকজন রাজনীতিবিদ নয়, জনগণ নিজেরাই নেবে। ভাবুন, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় সিদ্ধান্তে আপনার ভোটই হবে নির্ধারক এতে আপনার কণ্ঠস্বর আবার সত্যিকার অর্থেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

২
সম্প্রীতিমূলক সমন্বিত রাষ্ট্রসত্তা প্রতিষ্ঠা
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে সকল মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক 'Rainbow Nation' প্রতিষ্ঠা করা হইবে। অব্যাহত আলোচনা, মতবিনিময় ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎমুখী এক নতুন ধারার সামাজিক চুক্তিতে পৌঁছাইতে হইবে। একটি 'National Reconciliation Commission' গঠন করা হইবে।

সহজ করে বলা
সম্প্রীতিমূলক সমন্বিত রাষ্ট্রসত্তা প্রতিষ্ঠাফ্লিপ

এই পয়েন্টে বলা হয়েছে ‘রেইনবো নেশন’ বা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ার কথা যেখানে সবাই সমান মর্যাদায় থাকবে ধর্ম, মত বা দলের পার্থক্য না রেখে। এটি প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্প্রীতির সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান। সাধারণ মানুষের জন্য এর মানে হলো কম সহিংসতা, বেশি স্থিতিশীলতা, এবং এমন একটি দেশ যেখানে রাজনীতির জন্য আপনার চাকরি, ব্যবসা বা পড়াশোনা ব্যাহত হবে না। একটি ‘ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ কাজ করবে যাতে মতবিরোধ আলোচনায় মেটে, সংঘর্ষে নয়। মানুষ আবার একে অপরের উপর বিশ্বাস ফিরিয়ে আনলে জাতি একসাথে এগিয়ে যেতে পারে।

৩
নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এবং স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে স্থায়ী সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে একটি 'নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার' ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হইবে।

সহজ করে বলা
নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তনফ্লিপ

এই পয়েন্টের মূল উদ্দেশ্য হলো নির্বাচনকে সত্যিকার অর্থে অবাধ ও নিরপেক্ষ করা। ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ মানে নির্বাচনকালে ক্ষমতাসীন দল সাময়িকভাবে সরে দাঁড়াবে, আর একটি নিরপেক্ষ দল পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে যাতে কেউ ফলাফলকে প্রভাবিত করতে না পারে। আপনার জন্য এর মানে হলো আপনি নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন, এবং জানবেন আপনার ভোট সঠিকভাবে গণনা হবে। কোনো দলই রাষ্ট্রের ক্ষমতা ব্যবহার করে নিজের জয় নিশ্চিত করতে পারবে না। আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে নির্বাচন, তাই এটি আপনার ভোটাধিকার ও স্বাধীনতার সুরক্ষা দেয়।

৪
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনয়ন করা হইবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য (Checks and Balances) প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুসমন্বয় করা হইবে।

সহজ করে বলা
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠাফ্লিপ

এই পয়েন্টে মূলত রাষ্ট্রের ক্ষমতার ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে অনেক সময় এক ব্যক্তি বা এক পদে অতিরিক্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকে। এই সংস্কারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভা, বিচার বিভাগ ও সংসদের ক্ষমতা ন্যায্যভাবে ভাগ করা হবে, যাতে কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারে। নাগরিকদের জন্য এর মানে হলো শাসন হবে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর, ক্ষমতার অপব্যবহার কমবে, আর জবাবদিহি বাড়বে। যখন ক্ষমতার ভারসাম্য থাকে, তখন দুর্নীতি কমে এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা মানুষের কল্যাণে কাজ করে।

৫
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময়সীমা নির্ধারণ
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করিতে পারিবেন না।

সহজ করে বলা
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময়সীমা নির্ধারণফ্লিপ

এই পয়েন্ট অনুযায়ী, কেউ পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না। এর উদ্দেশ্য হলো কাউকে চিরস্থায়ী ক্ষমতার মালিক হতে না দেওয়া। নিয়মিত নেতৃত্ব পরিবর্তন হলে নতুন চিন্তা, তরুণ নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনী নীতি গঠনের সুযোগ তৈরি হয়। নাগরিকদের জন্য এর মানে হলো রাষ্ট্র আর কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এটি গণতন্ত্রকে জীবন্ত রাখে এবং রাজনীতিকে নবীন, দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিমূলক করে তোলে।

৬
আইন সভায় উচ্চকক্ষের প্রবর্তন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সংসদে 'উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা' প্রবর্তন করা হইবে।

সহজ করে বলা
আইন সভায় উচ্চকক্ষের প্রবর্তনফ্লিপ

এই পয়েন্টে বলা হয়েছে সংসদে একটি ‘উচ্চকক্ষ’ গঠনের কথা, যেখানে অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ নাগরিকরা নতুন আইনগুলো পাস হওয়ার আগে যাচাই-বাছাই করবেন। যুক্তরাজ্য বা ভারতের মতো দেশে এই উচ্চকক্ষ আইনগুলোর ‘অভিভাবক’ হিসেবে কাজ করে যাতে তাড়াহুড়ো বা রাজনৈতিক স্বার্থে করা কোনো আইন জনগণের ক্ষতি না করে। বাংলাদেশের জন্য এর মানে হলো যে কোনো নতুন নীতি বা আইন হবে ভালোভাবে পরীক্ষা করা, ন্যায্য, বাস্তবসম্মত ও দীর্ঘমেয়াদে উপকারী। এতে রাতারাতি স্বার্থসিদ্ধির জন্য আইন পাস হওয়া বন্ধ হবে, আর নাগরিকেরা পাবেন আরও নিরাপদ ও সুবিবেচিত আইন।

৭
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

আস্থাভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী বিল এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত এমন সব বিষয় ব্যতীত অন্যসব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতামত প্রদানের সুযোগ নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করিবার বিষয় বিবেচনা করা হইবে।

সহজ করে বলা
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনফ্লিপ

এই সংস্কারের লক্ষ্য হলো সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করা, যা বর্তমানে সংসদ সদস্যদের বাধ্য করে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোট দিতে even যদি তা নিজের এলাকার মানুষের ক্ষতি করে। এই পরিবর্তনের ফলে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে জনগণের স্বার্থে কথা বলতে ও ভোট দিতে পারবেন। আপনার জন্য এর মানে হলো আপনার এমপি এখন সত্যিকার অর্থে আপনার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে পারবেন, শুধু দলের নির্দেশ মানার লোক হিসেবে নয়। এতে সংসদ আবার মতবিনিময়, বিতর্ক ও নতুন চিন্তার জায়গা হয়ে উঠবে অন্ধ আনুগত্যের নয়।

৮
নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

স্বাধীন, দক্ষ, নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন করিবার লক্ষ্যে বর্তমান আইন সংশোধন করা হইবে। ইভিএম নয়, সকল কেন্দ্রে পেপার-ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদান নিশ্চিত করা হইবে। RPO, Delimitation Order এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংস্কার করা হইবে।

সহজ করে বলা
নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারফ্লিপ

এই পয়েন্টে বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করার কথা। এর মানে আর কোনো গোপন বা দলীয় স্বার্থে নিয়োগ করা কমিশন থাকবে না। সব ভোট পেপার ব্যালটে হবে যাতে ফলাফল স্বচ্ছ ও যাচাইযোগ্য হয়। ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে আসন সীমানা পর্যন্ত সবকিছু পুনরায় ন্যায্যভাবে নির্ধারণ করা হবে। আপনার জন্য এর মানে হলো আপনার ভোট যেমন দেবেন, তেমনই গণনা হবে; নির্বাচন আর আগেই ঠিক করা খেলা মনে হবে না। গণতন্ত্রের মূল বিশ্বাস ভোটের প্রতি আস্থা আবার ফিরে আসবে।

৯
সমস্ত রাষ্ট্রীয় ও সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

সংকীর্ণ রাজনৈতিক দলীয়করণের ঊর্ধ্বে উঠিয়া সকল রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করিবার লক্ষ্যে এই সকল প্রতিষ্ঠান আইনি সংস্কারের মাধ্যমে পুনর্গঠন করা হইবে। শুনানির মাধ্যমে সংসদীয় কমিটির ভেটিং সাপেক্ষে গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে নিয়োগ প্রদান করা হইবে।

সহজ করে বলা
সমস্ত রাষ্ট্রীয় ও সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠনফ্লিপ

এই পয়েন্টে বাংলাদেশের প্রধান রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন ইত্যাদি পুনর্গঠনের কথা বলা হয়েছে যাতে তারা জনগণের জন্য কাজ করে, কোনো দলের অনুগত হয়ে নয়। বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান দলীয়করণের কারণে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। এগুলো পুনর্গঠন মানে সততা, স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রশাসন পুনরুদ্ধার। গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগগুলো সংসদীয় শুনানির মাধ্যমে হবে, যাতে গোপনে কেউ ক্ষমতাধর পদে বসতে না পারে। সাধারণ মানুষের জন্য এর মানে হলো চাকরিতে ও প্রশাসনে ন্যায্য সুযোগ, আর বিচার হবে যোগ্যতা ও সত্যের ভিত্তিতে, সম্পর্কের নয়।

১০
জুডিশিয়াল কমিশন গঠন ও বিচারপতি নিয়োগ আইন প্রণয়ন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

বর্তমান বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি 'জুডিশিয়াল কমিশন' গঠন করা হইবে। অধস্তন আদালত সমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান সুপ্রীম কোর্টের উপর ন্যস্ত হইবে। বিচার বিভাগের জন্য সুপ্রীম কোর্টের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি পৃথক সচিবালয় থাকিবে। সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিদের অভিশংসন প্রশ্নে সংবিধানে বর্ণিত ইতোপূর্বেকার 'সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল' ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করা হইবে।

সহজ করে বলা
জুডিশিয়াল কমিশন গঠন ও বিচারপতি নিয়োগ আইন প্রণয়নফ্লিপ

এই সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো বিচারব্যবস্থাকে স্বচ্ছ, ন্যায্য ও সত্যিকার স্বাধীন করা। একটি নতুন ‘জুডিশিয়াল কমিশন’ গঠিত হবে যা পুরো আদালত ব্যবস্থা পর্যালোচনা ও আধুনিক করবে। বিচারকদের নিয়োগ হবে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়, আর অধস্তন আদালতগুলো থাকবে সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণে, কোনো মন্ত্রণালয়ের নয়। পাশাপাশি শীর্ষ বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ পুনঃপ্রবর্তন করা হবে। নাগরিকদের জন্য এর মানে হলো দ্রুত ও ন্যায্য বিচার, কম রাজনৈতিক মামলা, এবং ‘ক্ষমতাবানদের কিছু হয় না’ এই ধারণার অবসান। শক্তিশালী ও স্বাধীন আদালত মানেই আইনের সামনে সবাই সমান।

১১
প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন গঠন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ পরিষেবা, জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন গড়িয়া তুলিবার লক্ষ্যে যোগ্য, অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি 'প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন' গঠন করিয়া প্রশাসন সংস্কার ও পুনর্গঠন করা হইবে। মেধা, সততা, সৃজনশীলতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি হিসাবে বিবেচনা করা হইবে।

সহজ করে বলা
প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন গঠনফ্লিপ

এই সংস্কারের লক্ষ্য হলো প্রশাসনকে জনগণের সেবায় সত্যিকার অর্থে কার্যকর করে তোলা। আজও অনেক মানুষ সরকারি অফিসে গিয়ে হতাশ হন দেরি, ঘুষ বা দলীয় প্রভাবের কারণে সহজ কাজও জটিল হয়ে যায়। একটি ‘প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন’ এসব পরিবর্তন করবে। আমলাতন্ত্রকে ক্ষমতার নয়, সেবার কাঠামোয় রূপান্তর করা হবে। কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হবে মেধা ও সততার ভিত্তিতে, পরিচয়ের নয়। পুলিশ জনগণকে ভয় দেখাবে না, বরং সেবা দেবে সম্মানের সাথে। ভাবুন, পাসপোর্ট বা জমির কাগজ কয়েক দিনের মধ্যেই হয়ে যাচ্ছে এই সংস্কার সেটাকেই বাস্তবে রূপ দিতে চায়।

১২
মিডিয়া কমিশন গঠন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান ও সার্বিক সংস্কারের লক্ষ্যে একটি 'মিডিয়া কমিশন' গঠন করা হইবে। সৎ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ পুনরুদ্ধার করিবার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হইবে। ICT Act, Digital Security Act, Special Power Act সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সকল কালাকানুন বাতিল করা হইবে।

সহজ করে বলা
মিডিয়া কমিশন গঠন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাফ্লিপ

এই সংস্কার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করবে এবং সাংবাদিকদের ভয়মুক্তভাবে কাজ করার নিশ্চয়তা দেবে। বছরের পর বছর ধরে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইন মানুষের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে, সত্য বলা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। একটি নতুন ‘মিডিয়া কমিশন’ এসব কালাকানুন বাতিল করবে এবং এমন একটি ব্যবস্থা গড়বে যেখানে মিডিয়া ও সরকার দুটোই সত্যের কাছে জবাবদিহি থাকবে। আপনার জন্য এর মানে হলো আপনি যে খবর পড়বেন তা বিশ্বাস করতে পারবেন, নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারবেন, এবং সত্য বলায় কোনো শাস্তির ভয় থাকবে না। স্বাধীন গণমাধ্যমই সমাজের আয়না; এটি না থাকলে সত্যও হারিয়ে যায়।

১৩
দুর্নীতি প্রতিরোধ ও ন্যায়পাল নিয়োগ
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোন আপোষ করা হইবে না। বিগত দেড় দশকব্যাপী সংঘটিত অর্থ পাচার ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করিয়া একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হইবে। সংবিধান অনুযায়ী 'ন্যায়পাল (Ombudsman)' নিয়োগ করা হইবে।

সহজ করে বলা
দুর্নীতি প্রতিরোধ ও ন্যায়পাল নিয়োগফ্লিপ

এই পয়েন্টে দুর্নীতির ক্ষেত্রে ‘শূন্য সহনশীলতা’র প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, কেউ যত ক্ষমতাবানই হোক না কেন, জনগণের টাকা চুরি করলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। গত কয়েক বছরে দেশ থেকে কত টাকা পাচার হয়েছে তা তুলে ধরে একটি ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশ করা হবে। পাশাপাশি ‘ন্যায়পাল (Ombudsman)’ নিয়োগ করা হবে যার একমাত্র কাজ হবে সরকারি কর্মকর্তা বা রাজনীতিবিদদের অনিয়ম তদন্ত করা। নাগরিকদের জন্য এর মানে হলো আপনার করের টাকা অবশেষে সম্মান পাবে। রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, স্কুলে যে টাকা যাওয়ার কথা, তা আর ব্যক্তিগত পকেটে যাবে না। সৎ মানুষ উপরে উঠবে, দুর্নীতিবাজরা নিচে নামবে।

১৪
সর্বস্তরে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হইবে। মানবিক মূল্যবোধ ও মানুষের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং অমানবিক নিষ্ঠুর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অবসান ঘটানো হইবে। Universal Declaration of Human Rights অনুযায়ী মানবাধিকার বাস্তবায়ন করা হইবে।

সহজ করে বলা
সর্বস্তরে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাফ্লিপ

এই সংস্কার নিশ্চিত করতে চায় যে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ধনী বা গরিব, ক্ষমতাবান বা সাধারণ আইনের সুরক্ষার অধীনে থাকবে। এটি বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও নির্যাতনের স্থায়ী অবসান ঘটাবে। যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের জন্য এটি ন্যায়বিচারের আশা। সাধারণ নাগরিকদের জন্য এর মানে হলো নিরাপত্তা আপনি নির্ভয়ে কথা বলতে, চলাফেরা করতে ও বাঁচতে পারবেন, অন্যায়ভাবে তুলে নেওয়ার ভয় ছাড়া। যখন আইন সবার জন্য সমান হয়, সমাজ হয় মানবিক ও শান্তিপূর্ণ। এই সংস্কার সেই বিশ্বাস ফিরিয়ে আনে যে ন্যায়বিচার শুধু প্রভাবশালীদের জন্য নয়, সবার জন্য।

১৫
অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ ও গবেষক, অভিজ্ঞ ব্যাংকার, কর্পোরেট নেতা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি সমন্বয়ে একটি 'অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন' গঠন করা হইবে। মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নিরিখে প্রবৃদ্ধির সুফল সুষম বণ্টনের মাধ্যমে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূরীকরণ করা হইবে।

সহজ করে বলা
অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠনফ্লিপ

এই পয়েন্টের লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা যাতে উন্নয়নের সুফল সবার মধ্যে ভাগ হয়, কেবল কয়েকজন ধনীর মধ্যে নয়। একটি ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন’ গঠিত হবে যেখানে অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও ব্যবসায়িক নেতা মিলে এমন নীতি তৈরি করবেন যাতে ধনী-গরিবের ব্যবধান কমে। দাম স্থিতিশীল থাকবে, কর্মসংস্থান বাড়বে, আর অর্থনীতি পুরস্কৃত করবে পরিশ্রম ও সততাকে দলীয় সম্পর্ককে নয়। ভাবুন, এমন একটি বাংলাদেশ যেখানে এক জন কৃষক, এক তরুণ উদ্যোক্তা, আর এক শ্রমিক সবাই তাদের পরিশ্রমে উন্নতি করতে পারে পরিচয় নয়, যোগ্যতাই হবে মূল চাবিকাঠি। এটাই প্রকৃত উন্নয়ন যেখানে সমৃদ্ধি ভাগাভাগি হয়, বাছাই করে দেওয়া হয় না।

১৬
ধর্মীয় স্বাধীনতার সর্বোচ্চ নিশ্চয়তা প্রদান
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

'ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার' এই মূলনীতির ভিত্তিতে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার ভোগ করিবেন। দল-মত ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাহাড়ি ও সমতলের ক্ষুদ্র-বৃহৎ সকল জাতিগোষ্ঠীর সংবিধান প্রদত্ত সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্ম-কর্মের অধিকার এবং জীবন, সম্ভ্রম ও সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা হইবে।

সহজ করে বলা
ধর্মীয় স্বাধীনতার সর্বোচ্চ নিশ্চয়তা প্রদানফ্লিপ

এই সংস্কার নিশ্চিত করবে যে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ যে ধর্মের অনুসারীই হোন না কেন ভয় বা বৈষম্য ছাড়াই তার ধর্ম পালন করতে পারবেন। এটি 'ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার' এই চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। কেউ মসজিদে, মন্দিরে বা গির্জায় নামাজ বা প্রার্থনা করলে তাকে আর ভিন্ন চোখে দেখা হবে না। সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী পাবে আইনি সুরক্ষা ও সমান সুযোগ। সাধারণ মানুষের জন্য এর মানে হলো এলাকায় শান্তি, কর্মস্থলে সম্মান, আর সন্তানরা বড় হবে এমন এক দেশে যেখানে ধর্মের পার্থক্য নয়, বাংলাদেশের পরিচয়ই সবার আগে।

১৭
মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় শ্রমের ন্যায্য মজুরী নিশ্চিত করা
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

মুদ্রাস্ফীতির আলোকে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা হইবে। শিশু শ্রম বন্ধ করিয়া তাহাদের জীবন বিকাশের উপযোগী পরিবেশ ও ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হইবে। পাটকল, বস্ত্রকল, চিনিকলসহ সকল বন্ধ শিল্প পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হইবে। প্রবাসী শ্রমিকদের জীবন, মর্যাদা ও কর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হইবে।

সহজ করে বলা
মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় শ্রমের ন্যায্য মজুরী নিশ্চিত করাফ্লিপ

এই পয়েন্ট শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলে যারা প্রতিদিনের পরিশ্রমে দেশের অর্থনীতি চালায়। এখানে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এমন মজুরির, যা মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ যাতে পরিবারের আয় জীবনের খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। শিশু শ্রম বন্ধ করা হবে, যাতে প্রতিটি শিশু শিখতে পারে, বেড়ে উঠতে পারে, স্বপ্ন দেখতে পারে। বন্ধ কারখানা ও পাটকলগুলো পুনরায় চালু করে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। প্রবাসী শ্রমিকদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এই সংস্কার মানে হলো শ্রমের মর্যাদা, জীবনের নিশ্চয়তা, আর এক পরিশ্রমী জীবনের সার্থক স্বীকৃতি।

১৮
শিল্প, বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানী খাত আধুনিকায়ন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাতে দায়মুক্তি আইনসহ সকল কালাকানুন বাতিল করা হইবে এবং জনস্বার্থবিরোধী কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি হইতে বিদ্যুৎ ক্রয়ে চলমান দুর্নীতি বন্ধ করা হইবে। নবায়নযোগ্য ও মিশ্র এনার্জি-নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং গ্যাস ও খনিজ সম্পদ আবিষ্কার ও আহরণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।

সহজ করে বলা
শিল্প, বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানী খাত আধুনিকায়নফ্লিপ

এই সংস্কার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সততা ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আনার কথা বলে। বহু বছর ধরে দুর্নীতি ও তড়িঘড়ি প্রকল্পের কারণে বিদ্যুতের খরচ বেড়েছে, অথচ লাভবান হয়েছে কেবল কিছু লোক। এখন এসব অপচয়ী চুক্তি বাতিল হবে, আর বিনিয়োগ হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সোলার, বায়ু ও জলবিদ্যুতে যাতে ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ হয় পরিষ্কার ও সাশ্রয়ী। গ্যাস ও খনিজ সম্পদ আহরণ হবে দায়িত্বশীলভাবে, গোপনে নয়। নাগরিকদের জন্য এর মানে হলো লোডশেডিং কমবে, বিল কমবে, আর বাংলাদেশ হবে পরিবেশবান্ধব ও শক্তিতে স্বনির্ভর। এটি এমন এক শক্তি খাত গড়ার প্রতিশ্রুতি যা মানুষের সেবা করবে, মুনাফার নয়।

১৯
জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করিয়া বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

বৈদেশিক সম্পর্কের সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হইবে। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মধ্যে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী তৎপরতা বরদাস্ত করা হইবে না। সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদকে রাজনৈতিক ঢাল হিসাবে ব্যবহার করার অপতৎপরতা বন্ধ করা হইবে।

সহজ করে বলা
জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করিয়া বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়নফ্লিপ

এই পয়েন্টে বলা হয়েছে যে সব বৈদেশিক সম্পর্কের কেন্দ্রে থাকবে বাংলাদেশের স্বার্থ, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব। কোনো বিদেশি শক্তিকে আমাদের মাটি ব্যবহার করে সন্ত্রাস চালাতে বা রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি সব দেশের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়া হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বাণিজ্যের ভিত্তিতে। সাধারণ মানুষের জন্য এর মানে হলো সীমান্ত থাকবে নিরাপদ, দেশের ভাবমূর্তি বাড়বে, আর বৈদেশিক বিনিয়োগে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এক স্বাধীন ও গর্বিত পররাষ্ট্রনীতি মানেই বাংলাদেশের পতাকা উঁচু, দেশও নিরাপদ।

২০
প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আধুনিকায়নসহ সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সুসংগঠিত, যুগোপযোগী এবং সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত করিয়া গড়িয়া তোলা হইবে। স্বকীয় মর্যাদা বহাল রাখিয়া প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা হইবে।

সহজ করে বলা
প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আধুনিকায়নসহ সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখাফ্লিপ

এই সংস্কার নিশ্চিত করে যে প্রতিরক্ষা বাহিনী সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকবে এবং শুধু জাতির সুরক্ষায় কাজ করবে। বাহিনীকে আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম দিয়ে যুগোপযোগী করা হবে, যাতে তারা ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে সততা ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে। এর মানে হলো প্রতিরক্ষা বাহিনী আর কোনো রাজনৈতিক হাতিয়ার নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার প্রকৃত রক্ষক। নাগরিকদের জন্য এটি মানসিক শান্তি ও আস্থা একটি দেশ যেখানে সেনাবাহিনী জনগণের নয়, জনগণই সেনাবাহিনীর প্রতি সম্মানিত আস্থা রাখে। এটি বাহিনীর মর্যাদা, পেশাদারিত্ব ও জাতীয় গর্বকে শক্ত ভিত্তি দেয়।

২১
বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলি স্বশাসিত করা
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

ক্ষমতার ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলিকে অধিকতর স্বাধীন, শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান করা হইবে। এই সকল প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হইবে যেন তাহারা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান ও উন্নয়ন কার্যক্রমে কার্যকর ভূমিকা রাখিতে পারে।

সহজ করে বলা
বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলি স্বশাসিত করাফ্লিপ

এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো স্থানীয় সরকারকে প্রকৃত ক্ষমতা দেওয়া ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনগুলো যেন নিজের এলাকার সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে পারে। এখন অনেক সিদ্ধান্ত ঢাকায় বসে হয়, ফলে এলাকার মানুষ প্রভাব ফেলতে পারে না। যখন স্থানীয় সরকার তাদের বাজেট, রাস্তা, স্কুল ও হাসপাতালের দায়িত্ব নেবে, তখন কাজ হবে দ্রুত, দুর্নীতি কমবে, আর জবাবদিহিতা বাড়বে। অর্থাৎ আপনার রাস্তা, আপনার স্কুল, আপনার হাসপাতাল চালাবে সেই এলাকার মানুষ আপনার পরিচিত প্রতিনিধি। একটি বিকেন্দ্রীভূত বাংলাদেশ মানে প্রত্যেক গ্রাম ও শহর নিজেদের উন্নয়নের মালিক।

২২
শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদান
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যার যার অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের ব্যবস্থা করা হইবে। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা হইবে। এই তালিকার ভিত্তিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কল্যাণার্থে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হইবে।

সহজ করে বলা
শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদানফ্লিপ

এই সংস্কার ১৯৭১ সালের সত্যিকারের বীরদের সম্মান জানাতে চায় আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা, যাদের ত্যাগেই এই দেশ। অনেক শহীদ পরিবারের এখনো কোনো স্বীকৃতি বা সহায়তা নেই। এই নীতিতে প্রতিটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সরকারি তালিকা তৈরি হবে এবং তাদের পরিবার পাবে মর্যাদা, ভাতা ও সুরক্ষা। এটি শুধু ইতিহাস নয়, কৃতজ্ঞতা ও ন্যায়ের প্রশ্ন। যে জাতি তার বীরদের ভুলে যায়, সে নিজেকেই ভুলে যায়। এই নীতির মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্মকে মনে করিয়ে দেব বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে ত্যাগ, সাহস ও জনগণের ভালোবাসার ওপর।

২৩
আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

যুব সমাজের ভিশন, চিন্তা ও আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করিয়া আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হইবে। শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা হইবে। যুব সমাজের দক্ষতা বৃদ্ধি করিয়া 'ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড' আদায়ের লক্ষ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হইবে।

সহজ করে বলা
আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়নফ্লিপ

এই পয়েন্টটি দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য যারা স্বপ্ন দেখে, কাজ করে, আর আগামী বাংলাদেশের স্থপতি। একটি নতুন যুবনীতি গঠিত হবে যাতে তরুণরা আধুনিক দক্ষতা অর্জন করতে পারে, স্টার্টআপ তৈরি করতে পারে এবং মর্যাদাপূর্ণ চাকরি পায়। শিক্ষিত বেকারদের জন্য থাকবে অস্থায়ী বেকারভাতা, যাতে তারা হতাশ না হয়ে নতুন কিছু শেখা বা ব্যবসা শুরুতে মন দিতে পারে। লক্ষ লক্ষ তরুণের জন্য এটি মানে পরিচয় বা প্রভাব নয়, মেধা ও পরিশ্রমই হবে সফলতার চাবিকাঠি। সরকার উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও সৃজনশীল শিল্পে বিনিয়োগ করবে যাতে হতাশা বদলে যায় সম্ভাবনায়। তরুণরা জাগলে, দেশও জেগে ওঠে।

২৪
নারীর মর্যাদা, সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে পদক্ষেপ
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারীর কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নারীর ক্ষমতায়নে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী গ্রহণ করা হইবে। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হইবে।

সহজ করে বলা
নারীর মর্যাদা, সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে পদক্ষেপফ্লিপ

এই সংস্কার নারীদেরকে নির্ভরশীল নয়, বরং জাতি গঠনের সমান অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। নারীর নিরাপত্তা, শিক্ষা ও নেতৃত্বে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। সংসদ নির্বাচনে নারীদের মনোনয়নে প্রাধান্য দেওয়া হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীরা পাবেন সমান বেতন, মাতৃত্বকালীন সহায়তা ও হয়রানি থেকে সুরক্ষা। নারী নেতৃত্ব মানে পরিবারে উন্নতি, সমাজে স্থিতিশীলতা। প্রতিটি মেয়ে যে শিক্ষক, প্রকৌশলী বা সংসদ সদস্য হতে চায় এই নীতি তাকে বলে: ‘তুমি পারবে’। নারীর ক্ষমতায়ন দয়া নয়, এটি বুদ্ধিমান রাষ্ট্র গঠনের পূর্বশর্ত।

২৫
চাহিদা ও জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

নিম্ন ও মধ্য পর্যায়ে চাহিদা ভিত্তিক শিক্ষা এবং উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হইবে। জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫% অর্থ বরাদ্দ করা হইবে। গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হইবে। শিক্ষা, শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং উৎপাদন খাতে গবেষণা ও উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে।

সহজ করে বলা
চাহিদা ও জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নফ্লিপ

এই সংস্কার শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে চায়, যাতে তা শুধু পরীক্ষার জন্য নয়, জীবনের জন্য প্রস্তুত করে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে থাকবে বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা, আর বিশ্ববিদ্যালয়ে গুরুত্ব পাবে গবেষণা ও উদ্ভাবন। সরকার জিডিপির ৫% শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেবে এটি দেশের ভবিষ্যতের জন্য বড় বিনিয়োগ। শিক্ষার্থীরা মুখস্থ নয়, চিন্তা করতে শিখবে। শিক্ষকরা পাবেন উন্নত প্রশিক্ষণ, আর গবেষণা যুক্ত হবে শিল্প ও কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে। পরিবারের জন্য এর মানে হলো সন্তানরা এমন শিক্ষা পাবে যা কর্মসংস্থান, সৃজনশীলতা ও আত্মবিশ্বাস এনে দেবে। শিক্ষা হবে মুক্তির হাতিয়ার, চাপের নয়।

২৬
'সবার জন্য স্বাস্থ্য' এই নীতির বাস্তবায়ন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

যুক্তরাজ্যের 'NHS' এর আদলে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রবর্তন করিয়া সবার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড চালু করা হইবে। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫% অর্থ বরাদ্দ করা হইবে। দারিদ্র্য বিমোচন না হওয়া পর্যন্ত সুবিধা বঞ্চিত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আরো সম্প্রসারিত করা হইবে।

সহজ করে বলা
'সবার জন্য স্বাস্থ্য' এই নীতির বাস্তবায়নফ্লিপ

এই সংস্কার প্রত্যেক নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবে অধিকার হিসেবে, অনুগ্রহ নয়। যুক্তরাজ্যের NHS মডেলের মতো বাংলাদেশেও চালু হবে সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে একটি ‘হেলথ কার্ড’ যার মাধ্যমে চিকিৎসা নেওয়া যাবে। কাউকে আর জমি বা গয়না বিক্রি করে হাসপাতালের বিল দিতে হবে না। সরকার জিডিপির ৫% স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করবে, আরও হাসপাতাল তৈরি হবে, বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হবে এবং গ্রামীণ এলাকায় প্রশিক্ষিত ডাক্তার পাঠানো হবে। সাধারণ মানুষের জন্য এর মানে হলো অসুস্থতার ভয়ে জীবন থেমে যাবে না; প্রয়োজনে চিকিৎসা নিশ্চিত থাকবে।

২৭
কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হইবে। পর্যায়ক্রমে সকল ইউনিয়নে কৃষিপণ্যের জন্য সরকারি ক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হইবে। শস্য বীমা, পশু বীমা, মৎস্য বীমা এবং পোল্ট্রি বীমা চালু করা হইবে। কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন এবং গবেষণার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হইবে।

সহজ করে বলা
কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাফ্লিপ

এই সংস্কার কৃষকদের প্রতি ন্যায্য আচরণের প্রতিশ্রুতি দেয় যারা সারাদেশের খাবারের যোগান দেয়। কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা হবে, যাতে পরিশ্রমের পর ক্ষতির মুখ দেখতে না হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র তৈরি হবে, যাতে কৃষক সরাসরি সরকারকে ফসল বিক্রি করতে পারে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে। কৃষি, পশু, মৎস্য ও পোল্ট্রি বীমা চালু করা হবে যাতে বন্যা বা খরার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতি হলে সুরক্ষা থাকে। কৃষিজমি অ-কৃষি কাজে ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হবে। সাধারণ মানুষের জন্য এর মানে হলো খাবারের দাম স্থিতিশীল থাকবে, গ্রামে দারিদ্র্য কমবে, আর কৃষি আবার মর্যাদার পেশা হবে।

২৮
সড়ক, রেল, নৌ পথের আধুনিকায়ন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

দেশের যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে সড়ক, রেল ও নৌপথের প্রয়োজনীয় সংস্কার করিয়া সারা দেশে সমন্বিত বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়িয়া তোলা হইবে। দেশের সমুদ্র বন্দর ও নৌ-বন্দর সমূহের আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হইবে।

সহজ করে বলা
সড়ক, রেল, নৌ পথের আধুনিকায়নফ্লিপ

এই সংস্কার একটি আধুনিক ও সংযুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা দেয়, যেখানে যাতায়াত হবে নিরাপদ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী। দেশের সড়ক, রেল ও নৌপথ একত্রে উন্নত ও সমন্বিত করা হবে যাতে পুরো যোগাযোগব্যবস্থা হয় একসুতোয় গাঁথা। যখন ট্রেন, বাস ও লঞ্চ একে অপরের সঙ্গে যুক্তভাবে চলবে, তখন মানুষ সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচাবে, ব্যবসাও বাড়বে। বন্দর ও নদীপথ আধুনিক করা হবে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও রপ্তানি বাড়াতে। নাগরিকদের জন্য এর মানে হলো গ্রাম থেকে শহরে যাতায়াত সহজ, দুর্ঘটনা কম, আর কর্মসংস্থান ও শিক্ষার সুযোগ বাড়বে। অবকাঠামো মানে শুধু সিমেন্ট নয় এটাই সুযোগের মেরুদণ্ড।

২৯
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও দুর্যোগ মোকাবিলায় পদক্ষেপ
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও ক্ষতি মোকাবিলায় টেকসই ও কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণ করা হইবে। বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বাধুনিক ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করিয়া প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হইবে। নদী ও জলাশয় দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হইবে। সামুদ্রিক সম্পদের বিজ্ঞানসম্মত জরিপের ভিত্তিতে তাহা আহরণ এবং অর্থনৈতিক ব্যবহারের ব্যবস্থা নেওয়া হইবে।

সহজ করে বলা
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও দুর্যোগ মোকাবিলায় পদক্ষেপফ্লিপ

এই সংস্কার বাংলাদেশের মানুষকে জলবায়ু পরিবর্তনের বাড়তে থাকা ঝুঁকি বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও খরা থেকে রক্ষা করতে চায়। এটি শুধু প্রতিক্রিয়া নয়, প্রস্তুতির ওপর জোর দেয়। সরকার শক্তিশালী বাঁধ তৈরি করবে, আধুনিক আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করবে এবং এমন সতর্কতা ব্যবস্থা চালু করবে যা সবচেয়ে দূরবর্তী গ্রামেও পৌঁছাবে। নদী ও খাল খনন করা হবে যাতে জলাবদ্ধতা ও বন্যা কমে। পাশাপাশি আমাদের সামুদ্রিক সম্পদ ‘ব্লু ইকোনমি’ বিজ্ঞানসম্মতভাবে ব্যবহৃত হবে। মানুষের জন্য এর মানে হলো প্রাণহানি কমবে, ঘরবাড়ি রক্ষা পাবে, আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখেও সমাজ থাকবে শক্ত ও প্রস্তুত। এটি আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি।

৩০
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতকে বৈশ্বিক মানে উন্নীত করিবার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হইবে। মহাকাশ গবেষণা এবং আণবিক শক্তি কমিশনের কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রায়োগিক সুযোগ সমৃদ্ধ করা হইবে।

সহজ করে বলা
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নফ্লিপ

এই সংস্কার বাংলাদেশকে প্রযুক্তি-নির্ভর জাতি হিসেবে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) খাতকে বৈশ্বিক মানে উন্নীত করা হবে, যার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ডিজিটাল চাকরি তৈরি হবে। মহাকাশ গবেষণা ও আণবিক শক্তি কমিশনকে আরও শক্তিশালী করা হবে বিজ্ঞান ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে উদ্ভাবন বাড়াতে। শিক্ষার্থীদের জন্য এর মানে হলো আধুনিক প্রযুক্তি খাতে কাজের সুযোগ; উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন বাজারে প্রবেশের সুযোগ। প্রযুক্তি বাড়লে দুর্নীতি কমে, কারণ সবকিছু হয় স্বচ্ছ। একটি শক্তিশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে এক স্মার্ট, দ্রুত ও সংযুক্ত জাতি যে বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে প্রস্তুত।

৩১
পরিকল্পিত, পরিবেশ বান্ধব আবাসন ও নগরায়ন নীতিমালা
ফ্লিপ করে সহজ ভাষায় দেখুন

একটি জাতীয় মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে শহরে ও গ্রামে কৃষি জমি নষ্ট না করিয়া এবং নগরে জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপ হ্রাস করিয়া পরিকল্পিত আবাসন ও নগরায়নের নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হইবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠির আবাসন নিশ্চিত করা হইবে।

সহজ করে বলা
পরিকল্পিত, পরিবেশ বান্ধব আবাসন ও নগরায়ন নীতিমালাফ্লিপ

শেষ এই পয়েন্টে এমন এক বাংলাদেশ কল্পনা করা হয়েছে, যেখানে শহর ও গ্রামে সবাই মর্যাদার সঙ্গে বাস করতে পারবে নিরাপদ, পরিষ্কার ও সাশ্রয়ী আবাসনে। এটি পরিকল্পিত আবাসন ও নগরায়ন নিয়ে, যা কৃষিজমি রক্ষা করবে এবং শহরের জনসংখ্যার চাপ কমাবে। একটি জাতীয় মহাপরিকল্পনা নির্ধারণ করবে কোথায় কীভাবে শহর বাড়বে সবুজ এলাকা, বিশুদ্ধ পানি ও টেকসই ভবন নিশ্চিত করবে। ধাপে ধাপে দরিদ্র ও গৃহহীন পরিবারগুলোকে আবাসন দেওয়া হবে, যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে। সাধারণ মানুষের জন্য এর মানে হলো পরিষ্কার বাতাসে শ্বাস নেওয়া, কর্মক্ষেত্র ও স্কুলের কাছেই থাকা, আর নিজের ছোট কিন্তু সম্মানজনক ঘর থাকা। এটি এমন এক উন্নয়নের স্বপ্ন যা সবার জন্য, কেবল সুবিধাভোগীদের জন্য নয়।